বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। প্রায় সব ফসলই এদেশের মাটিতে জন্মায়। তবে সব এলাকায় সব ফসল জন্মায় না। ফসল জন্মানো নির্ভর করে এলাকার পরিবেশের উপর। অতএব এদেশে ফসল তথা কৃষি কার্যক্রম চালাতে এলাকাভিত্তিক কৃষি পরিবেশ জানা দরকার। অর্থাৎ কৃষি পরিবেশ অঞ্চল কৃষি কার্যক্রমে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
আমরা জানি বাংলাদেশের কোথাও বৃষ্টিপাত বেশি আবার কোথাও কম হয়। কোথাও তাপমাত্রা কম এবং কোথাও বেশি। একেক অঞ্চলের মাটি একেক প্রকার। এসবই হলো পরিবেশ। এ পরিবেশের জন্যই বাংলাদেশের রাজশাহীতে আমের ফলন ভালো, দিনাজপুরে লিচুর ফলন ভালো, শ্রীমঙ্গলে চা ও কমলার ফলন ভালো, যশোরে খেজুরের ফলন ভালো। তাই আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশকে ৩০টি কৃষি পরিবেশ অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে।
কাজ-১: শিক্ষক বাংলাদেশের একটি মানচিত্র বোর্ডে ঝুলাবেন। শিক্ষার্থীদের দল গঠন করে বাংলাদেশের কোন জেলায় কোন ফসল ভালো জন্মে সেগুলোর নাম ও জেলার নাম টুকরা কাগজে লিখে মানচিত্রে বসাতে বলবেন। পরিশেষে ফসলসমৃদ্ধ মানচিত্রটি ব্যাখ্যা করবেন। |
ভিডিও প্রদর্শন: শিক্ষক বাংলাদেশের বিভিন্ন ফসলের এলাকাভিত্তিক ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করে এক নজরে বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরবেন। |
সর্বশেষ ১৯৮৮-১৯৮৯ সালে বাংলাদেশকে ৩০টি কৃষি পরিবেশ অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। কৃষি উৎপাদনের জন্য ফসল নির্বাচন, ফসল পরিচর্যা, রোগবালাই দমন ও ব্যবস্থাপনা এই সকল ক্ষেত্রে কৃষি পরিবেশ অঞ্চল বিবেচনায় নেওয়া হয়।
পরিবেশ অঞ্চল গঠনে কতগুলো নির্দিষ্ট বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়। প্রধান বিবেচ্য বিষয়গুলো হচ্ছে ভূমি, কৃষি আবহাওয়া, মৃত্তিকা এবং পানি পরিস্থিতি। এর প্রতিটি ক্ষেত্রে আবার বিভাজন রয়েছে। যেমন-ভূমির শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে ৫ ভাগে। উঁচু ভূমি, মাঝারি উঁচু ভূমি, মাঝারি নিচু ভূমি, নিচু ভূমি এবং অতি নিচু ভূমি।
কৃষি আবহাওয়া প্রসঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হয় খরিপ-পূর্ব আবহাওয়া, খরিপ আবহাওয়া, রবি আবহাওয়া ও চরম তাপমাত্রা।
কৃষি পরিবেশ অঞ্চল নির্ধারণে পানি পরিস্থিতি বা মাটির আর্দ্রতার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এ ছাড়া নদীর অববাহিকা, হাওর-বাঁওড় এলাকাও বিবেচনায় নেওয়া হয়।
মৃত্তিকার শ্রেণি বিবেচনায় বেলে মাটি, এঁটেল মাটি, বেলে দোআঁশ, এঁটেল দোআঁশ এবং এর পাশাপাশি মাটির PH ও (অম্লত্ব-ক্ষারত্ব) বিবেচ্য।
Read more